নুর আলম সিদ্দিক, পার্বতীপুর প্রতিবেদক : প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বিশ্বজননীর কাছে অনুভূতি
নাজমুজ সাকিব : এখানে পুরো বিশ্বকে মা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর বিশ্বের সকল প্রতিবন্ধী নর-নারীকে বিশ্বজননীর সন্তান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। বিশ্বজননীর কাছে তার প্রতিবন্ধী সন্তানদের কতগুলো প্রশ্ন রয়েছে। বিশ্বজননীর কাছে সন্তানদের প্রশ্ন হচ্ছে, আজ তোমার অগণিত সন্তান প্রতিবন্ধী হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছে। যাদের ক্রন্দন-রোল আর করুণ আর্তনাদে ভরে উঠেছে পুরো বিশ্বভূমি। মাগো, মাত্র একটি শব্দ প্রতিবন্ধী। তোর সেই প্রতিবন্ধী সন্তানগুলোর ইতিহাসও রয়ে গেছে এই বিশ্বভূমণ্ডলে। হয়তো সেই ইতিহাস আজ স্বর্ণাক্ষরে খচিত না থাকলেও কিন্তু রক্তাক্ষরে ঠিকই রয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়।
হে বিশ্বজননী, কখনো কি তুমি অনুভূতি করে দেখেছ তোমার প্রতিবন্ধী সন্তানগুলোর বিষাক্রান্ত কাতরধ্বনি? আজকে বোধ হয় তোকে চরমভাবে আঘাত করেছি। ক্ষমা করিস মাগো আছে মোর যত ভুলগুলি। আর কখনোও যদি শিহরণ জাগে তোর ঐ পবিত্র হৃদয়ের মাঝে, তাহলে নির্দোষে তোর সন্তানগুলো কেন প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মালো প্রশ্ন রাখিস বিধাতার কাছে। বিধাতার কাছে যদি জানা থাকে তোর সেই কঠোর প্রশ্নের উত্তর। জন্মগতভাবেই তোর প্রতিবন্ধী সন্তানগুলোকে কাঁধে নিতে হয় এক নিষ্ঠুরতম অপবাদের বোঝা।

আর এই সমাজ তো তাঁদেরকে মানুষ হিসেবে স্বীকৃতিই দিতে চায় না। তোর প্রতিবন্ধী সন্তানগুলোর চলার পথ আজ বঞ্চনা আর বৈষম্য দিয়ে পরিপূর্ণ। যেন বিনা অপরাধেই তাঁদেরকে ভোগ করতে হয় আশীবিষের ভয়ংকর যন্ত্রণা। প্রকৃতির মাঝে তোর প্রতিবন্ধী সন্তানগুলো আজ অবিচারের শিকল দিয়ে বাঁধা। যুগে যুগে যেন তাঁদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম ব্যর্থই হয় যথাতথা। মা রে! তাঁরা তো তোর সেই নরাধম সন্তানগুলির মতো এই বিশ্বকে লুটে-পুটে খেতে চায় না? চায় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য সামান্য একটু নিরাপদ আস্থা। কিন্তু হায়! এ তো দেখি বামন হয়ে চাঁদকে স্পর্শ করার মতো অসম্ভব কামনা। আজ প্রতিবন্ধীদের নায্য অধিকারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে তোর সেই নির্বোধ সন্তানেরা।


